জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত এক সাহাবীর গল্প
অসম্ভব বিনয় ও পরিশ্রমী
তিনি ছিলেন মক্কার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। কিন্তু তাকেও খালি হাতে হিজরত করে জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদীনায় চলে আসতে হয়।
যারা হিজরত করে মদীনায় এসেছেন তাদের মুহাজির বলা হয়। আর যারা মদীনার স্থানীয় তাদের আনসার বলা হয়। হিজরতের পর রাসূল সা. মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন।
এটা ছিল অসাধারণ একটি পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে নিঃস্ব হয়ে মদীনায় আসা সাহাবীদের মাথা গোজার ঠাঁই হয়। আনসার সাহাবীদের অবস্থাও অত ভালো ছিল না। তবু তারা সবকিছু উজাড় করে দ্বীনি ভাইদের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন।
মুহাজির আব্দুর রহমান বিন আওফ রা. আনসার সাহাবী সাদ বিন রাবীয়া রা. এর দ্বীনি ভাই হন। এদিকে মদীনাবাসীর মধ্যে সাদ রা. ছিলেন সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। রাসূল সা. যার যার অবস্থান অনুযায়ী ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন।
সাদ রা. তার সম্পদের অর্ধেক আব্দুর রহমান রা.কে দেয়ার প্রস্তাব দিলেন। এছাড়া উনার দুই স্ত্রী ছিল। তাদের যেকোনো একজনকে তালাক দিয়ে আব্দুর রহমান রা. এর সাথে বিয়ে দিতে চাইলেন।
আব্দুর রহমান রা. সবিনয়ে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আমাকে মদীনার বাজার দেখিয়ে দেন।’
কী আশ্চর্য প্রস্তাব, আর কী আশ্চর্য তার প্রতিক্রিয়া! বিশ্বনবীর সাহাবীরা ছিলেন এমনই। একজন দেখালেন অসম্ভব উদারতা। অন্যজন বিনয় এবং পরিশ্রমের মানসিকতা।
আব্দুর রহমান রা. বাজারে গিয়ে বাকিতে ঘি ও পনির কিনে নগদে বিক্রি করলেন। এভাবে কয়েক দিনের চেষ্টায় ভালো অঙ্কের লাভ করলেন। তার ব্যবসায়ীক জ্ঞান ও পরিশ্রম ছিল অসাধারণ। কিছুদিন পর তিনি মদীনার এক আনসার নারীকে বিয়ে করে রাসূল সা. এর সাথে সাক্ষাত করতে গেলেন।
রাসূল সা. দেখেই বুঝে ফেললেন আব্দুর রহমান বিয়ে করেছেন। কারণ তার পোশাকে ছিল জাফরানের রঙ। যেটা তার নববধুর পোশাক থেকে তার পোশাকে লেগেছিল।
রাসূল সা. হাসি মুখে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী খবর আব্দুর রহমান?’ উত্তরে বিয়ের কথা জানালেন তিনি।
রাসূল সা. জানতে চাইলেন, ‘মোহর কত দিয়েছো?’ উত্তরে বললেন, ‘খেজুরের বীজের ওজনের সমান স্বর্ণ।’ রাসূল সা. তাকে একটি বকরি দিয়ে হলেও বিয়ের খানা করার জন্য বললেন এবং আব্দুর রহমানের পরিবার ও তার ব্যবসার জন্য দুআ করলেন।
রাসূল সা. এর দুআ আল্লাহ তায়ালা কবুল করলেন। প্রচুর বরকত পেতে থাকলেন আব্দুর রহমান বিন আওফ রা.। ব্যবসার বরকত সম্পর্কে একদা তিনি বলেন, ‘আমি যদি পাথরও ধরতাম তাতেও বিশাল লাভ হতো।’
এভাবে পরিশ্রমীরা রাসূল সা. এর দুআ পেয়েছেন এবং আল্লাহ তায়ালাও তাদের জন্য বরকত ঢেলে দিয়েছেন। আল্লাহু আকবার।
জ্ঞানচর্চার মজলিসে অগ্রপথিক
ইসলাম গ্রহণের পর নিজ বাড়িতে পরিচিতদের দাওয়াত দিতেন আবু বকর রা.। তার আহ্বানে প্রথম দিকে ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন ছিলেন আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা.। তিনিও কয়েকজনের সাথে সেই মজলিসে বসতেন। শুরু থেকেই তিনি ইসলামের ওপর গভীর পান্ডিত্য অর্জন করেন।
দ্বীনের জ্ঞানে পান্ডিত্যের জন্য তিনি বিশেষ সম্মান ও দায়িত্ব পান। খলিফা আবু বকরের সময়ে মাত্র ৮জন সাহাবী ফতোয়া দিতে পারতেন। আব্দুর রহমান ছিলেন তার মধ্যে অন্যতম। তিনি ফিকহ বিষয়ে সমস্যার সমাধান দিতেন।
খলিফা উমর রা. জনসাধারণের খোঁজ নিতে বের হলে মাঝে মাঝে সাথে রাখতেন আব্দুর রহমানকে। একবার রাতের আঁধারে একটি বাড়িতে তারা শোরগোল লক্ষ্য করলেন। উমার রা. এর মনে সন্দেহ হলো ভেতরে নিশ্চয় মদপানের আসর বসেছে। তাদের হাতেনাতে ধরতে তিনি উদ্যোগী হচ্ছিলেন। এসময় আব্দুর রহমান তাকে আল কুরআনের দুটি আয়াত স্মরণ করালেন।
গোয়েন্দাগীরী করো না। (সূরা হুজরাত ১২)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার পিছে লেগো না। (বনি ইসরাইল ৩৬)
এই আয়াত দুটি শুনে উমর রা. সেদিকে আর একচুলও আগালেন না। বললেন, ‘আপনি যথার্থ বলেছেন এবং যথা সময়ে স্মরণ করিয়েছেন।’
একজন সফল ব্যবসায়ীর মধ্যে দ্বীনের ব্যাপারে এমন বুৎপত্তি কীভাবে এলো? আসলে তারা তাদের জীবনকে দ্বীনের জন্য নিবেদিত করেছিলেন। ফলে এমন অপূর্ব সমন্বয় সম্ভব হয়েছিল।
আস্থার প্রতীক
রাসূল সা. তাবুক যুদ্ধে একদিন অযু করতে গিয়ে ফিরতে দেরি করছিলেন। ওয়াক্ত চলে যায় কি না এই আশঙ্কায় মুসল্লিদের অনুরোধে আব্দুর রহমান ইমামতি শুরু করেন। এক রাকাত হওয়ার পর রসূল সা. চলে আসেন। আব্দুর রহমান পেছনে সরে আসতে চাইলে রাসূল সা. নিষেধ করেন এবং আব্দুর রহমানের ইমামতিতে নামাজ আদায় করেন।
এভাবে নানা সময়ে রাসূল সা. এর ভালোবাসা পেয়েছেন তিনি। মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সা. আরবের বিভিন্ন গোত্রে দাওয়াতী গ্রুপ প্রেরণ করেন। কিন্তু দাওয়াত দিতে গিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কারণে খালিদ বিন ওয়ালিদ বনু খুযায়মা গোত্রের ওপর চড়াও হন। এতে ওই গোত্রের অনেকে আহত ও নিহত হয়। রাসূল সা. এতে খুব মর্মাহত হন। তিনি রক্তমূল্য পরিশোধ করেন। এমনকি নিহত কুকুরের জন্যেও রক্তমূল্য দিয়েছিলেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খালিদ বিন ওয়ালিদের সাথে আব্দুর রহমানের ব্যাপক তর্ক লেগে যায়। একথা রাসূল সা. এর কানে আসে। তিনি খালিদ রা.কে ডেকে সতর্ক করেন। বলেন, ‘তুমি যদি ওহুদ পাহাড়ের সমান স্বর্ণ পেয়ে দ্বীনের পথে সবই দান করে দাও তবুও প্রথম দিকে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের সমান হতে পারবে না।’
এ থেকে বুঝা যায় আব্দুর রহমানের প্রতি রসূল সা. এর আস্থা ছিল অনেক বেশি। এভাবেই গুরুত্ব ও মর্যাদা পেয়েছেন আব্দুর রহমান রা.।
খলিফাদের সময়েও তিনি সম্মানিত হয়েছেন। হযরত উমর এবং হযরত উসমান দুজনেই তাদের খেলাফতের প্রথম বছরে আব্দুর রহমানকে আমিরুল হজ্জ করে মক্কায় পাঠিয়েছিলেন।
মৃত্যু শয্যায় আবু বকর রা. পরবর্তী খলিফা মনোনয়নের জন্য আব্দুর রহমান-সহ কয়েকজন বিশিষ্ট সাহাবীর সাথে পরামর্শ করেন। উমর রা. এর ব্যাপারে আবু বকর মত প্রকাশ করলে আব্দুর রহমান সেটা সমর্থন করেন।
এছাড়া দ্বিতীয় খলিফা উমর রা. নামাজরত অবস্থায় ছুরিকাহত হন। আহত অবস্থায় তিনি আব্দুর রহমানকে ইশারায় বাকি নামাজের জন্য ইমমাতি করতে বলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আব্দুর রহমান ইমামতি গ্রহণ করে দ্রুত নামাজ শেষ করেন।
শাহাদাতের পূর্বে উমর রা. খলিফা নির্বাচনের জন্য ছয় জনের একটি প্যানেল করেন। এর মধ্যে আব্দুর রহমানও ছিলেন। প্যানেলের অন্য সাহাবীরা প্রয়াত খলিফার ইচ্ছা অনুযায়ী আব্দুর রহমানকে নির্বাচন কমিশনার করেন। তিনি খলিফার অসিয়ত অনুযায়ী তিন দিন তিন রাতের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরামর্শ শেষে ফজরের নামাজের পর সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নতুন খলিফা হিসেবে উসমান রা. এর নাম ঘোষণা করেন।
এই নির্বাচনকালীন তিনদিন আব্দুর রহমান রা. নামাজের ইমামতি এবং খলিফার দাপ্তরিক কাজ করেন।
ওপরের এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে আব্দুর রহমানের প্রতি মুসলিম সমাজের আস্থা ছিল অত্যন্ত বেশি। তিনিও নিষ্ঠার সাথে সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন।
সাহসী এক যোদ্ধা
রাসূল সা. এর সাথে প্রত্যেকটি যুদ্ধে আব্দুর রহমান বিন আওফ শরিক ছিলেন। যুদ্ধবিদ্যায় ছিলেন দারুণ পারদর্শী এবং সাহসী। রাসূল সা. এর সাথে থাকতেন সব সময়। বদর যুদ্ধে তিনি পায়ে আঘাত পান। ওহুদের যুদ্ধে তার শরীরে ৩১টি আঘাত লাগে। প্রচন্ড সাহসের কারণে তিনি শত্রুকে ছত্রভঙ্গ করতে পারতেন। ষষ্ঠ হিজরিতে দুমাতুল জান্দাল অভিযানে রাসূল সা. তাকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন। নিজ হাতে আব্দুর রহমানের মাথায় যুদ্ধের পাগড়ি পরিয়ে দেন।
তেইশ হিজরিতে রাসূল সা. এর স্ত্রীরা সবাই একসাথে হজে গমন করেন। সেই কাফেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আব্দুর রহমান ও উসমান রা.। মূলত রাসূল সা. ও খলিফাদের সময়ে তাকে যখন যা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তিনি নিষ্ঠার সাথে পালন করেছেন। বহুবিধ প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন।
দানশীলতায় অনন্য
দানশীলতার অসাধারণ কিছু নজির রেখেছেন আব্দুর রহমান বিন আউফ। সম্পদশালী হলেও ইসলাম গ্রহণের কারণে তাকে দুইবার হিজরত করতে হয়েছে। আবিসিনিয়া ও মদীনায়। মদীনায় তিনি নিঃস্ব হাতে পৌঁছান। কিন্তু তার ব্যবসায়ীক মেধা ও পরিশ্রম ছিল অসাধারণ। আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক সম্পদের মালিক হন। একই সাথে দ্বীন ইসলামের জন্য অকাতরে সম্পদ বিলিয়েছেন।
তাবুক যুদ্ধে তিনি ৮ হাজার দিনার রাসূল সা. এর হাতে দেন। মুনাফিকরা বলতে লাগলো, ‘সে তো রিয়াকারী।’ অর্থাৎ লোকদেখানো কাজ করছে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে এসব কথার জবাব দিলেন। বললেন, তারা সেই ব্যক্তি যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হতে থাকবে। (সূরা তওবা ৭১) দানের এই ঘটনায় উমার রা. রসূল সা. এর কাছে এসে বললেন, ‘আব্দুর রহমান গোনাহগার হয়ে যাচ্ছে। কারণ তার পরিবারের জন্য সে কিছুই রাখেনি।’ শুনে রাসূল সা. আব্দুর রহমানকে ডাকলেন। জানতে চাইলেন। জবাবে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসূল যে রিজিক, কল্যাণ ও প্রতিদানের ওয়াদা করেছেন
সেটা ঘরে রেখে এসেছি।’
ইসলামের প্রতি কী পরিমাণ বিশ্বাস ও আস্থা থাকলে কেউ এমন চিন্তা করতে পারে! বস্তুত আব্দুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অসাধারণ। তিনি দান করে নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা হচ্ছে দান করলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়।
একবার মদীনায় বিশাল এক বাণিজ্য বহর এলো। চারিদিকে শোরগোল পড়ে গেল। ওই কাফেলা ছিল আব্দুর রহমান বিন আউফের। এটা শোনার পর মা আয়েশা রা. স্মৃতিচারণ করে বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সা.কে বলতে শুনেছি, আব্দুর রহমানকে সিরাতের ওপর একবার হেলে গিয়ে আবার সোজা হয়ে দাঁড়াতে দেখেছি।’ অন্য একটি হাদীসে এসেছে, ‘আব্দুর রহমান হামাগুড়ি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’
এই কথা কানে এলো আব্দুর রহমানের। তিনি বললেন, আমাকে সোজা হয়েই জান্নাতে যেতে হবে। তিনি ওই কাফেলার সমস্ত মালসামাল ও সবগুলো উট দ্বীনের রাস্তায় দান করে দেন।
এছাড়া নবী পরিবারের জন্য তিনি প্রচুর খরচ করেছেন। অনেক ব্যক্তিকে দাসমুক্ত করেন। তার সম্পদ থেকে প্রায় ৩০ হাজার দাসমুক্তের কথা জানা যায়।
জবাবদিহির ভয়ে ভীত নরম দিলের মানুষ
কিয়ামতের দিনকে বড্ড ভয় করতেন আব্দুর রহমান। এছাড়া ইসলাম বিজয়ী হলে প্রায়ই তিনি অতীতের কথা স্মরণ করতেন। অশ্রুসজল হয়ে উঠতো তার চোখ।
একবার খেতে বসে ভালো ভালো খাবার দেখে হুহ করে কেঁদে দেন। বললেন, ‘রাসূল সা. নিজ ঘরে যবের রুটিও পেট ভরে খেতে পারেননি।’
একদিন ইফতারের সময় ভালো খাবার এলো। তিনি সেদিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমার চেয়েও উত্তম ছিলেন মুসয়াব ইবনে উমায়ের। অথচ তিনি শহীদ হলে কাফনের জন্য মাত্র এক টুকরা কাপড় পাওয়া গেল। সেই কাপড় দিয়ে মাথা ঢাকলে পা বেরিয়ে যায়। আবার পা ঢাকলে মাথা বেরিয়ে যায়। অবশেষে পায়ের দিকটা ঘাস দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত প্রাচুর্য দিচ্ছেন। আমি ভয়ে আছি দুনিয়াতেই না জানি আমার ভালো কাজের বদলা পেয়ে যায়!’
অথচ আব্দুর রহমান ছিলেন আশারায়ে মুবাশ্শারার একজন। অর্থাৎ সেই দশ সাহাবীর একজন যারা দুনিয়ায় থাকতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন।
দক্ষ ব্যবসায়ী!
দ্বীনের জ্ঞানে পন্ডিত!
দায়িত্বের ব্যাপারে আস্থাভাজন!
সাহসী যোদ্ধা!
অসম্ভব দানশীল!
এতগুলো গুণের অধিকারী ছিলেন আব্দুর রহমান বিন আওফ রা.। মূলত তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি তার মধ্যে এতগুলো গুণের সমন্বয় ঘটিয়েছে। আসুন আমরাও তাকওয়ার গুন অর্জন করে তার মতো হওয়ার চেষ্টা করি। আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি রহম করুন। তার জীবন থেকে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ দিন। আমিন
লেখক: লতিফুর রহমান


0 Comments
Do not post spam link in the comment box