ইসলামী শব্দগুচ্ছ :
একজন মুসলিমের কখন কি বলা আবশ্যক:
০১. কারো প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে:
(পুং লিঙ্গ) - جزاك الله خییرا
(জাযাকাল্লহু খইর)
(স্ত্রী লিঙ্গ) - جزاك الله خییر
(জাযাকিল্লাহু খইর)
(বহু বচন) - جزاكم الله خییر
(জাযাকুমুল্লহু খইর)
অর্থ - আল্লহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান
করুক।
[বি.দ্র.: মেয়েদের সাথে অফিসিয়ালি কথা
বলার সময় পুং লিঙ্গে বলা ভালো]
=> প্রতি উত্তরে:
(পুং লিঙ্গ) - وانتم فجزاك الله خیر
(ওয়া আংতুম ফা জাযাকাল্লহু খইর)
(স্ত্রী লিঙ্গ) - وانتم فجزاك الله خیر
(ওয়া আংতুম ফা জাযাকিল্লাহু খইর)
(বহু বচন) - وانتم فجزاكم الله خیر
(ওয়া আংতুম ফা জাযাকুমুল্লহু
খইর)
অর্থ- আল্লহ আপনাকেউ উত্তম প্রতিদান দান
করুক।
*সংক্ষেপে:
(এক বচন) - و ایك (ওয়া ইয়্যাক)
(বহু বচন) - و ایكم (ওয়া ইয়্যাকুম)
০২. আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা করতে:
আল্লহ্ নামের শেষে - (الله (سبحانه وتعالی
[আল্লহ (সুবহানাহু তা'য়ালা)-Alloh (SWT)]
০৩. চেনা-অচেনা, ছোট-বড়, বাবা-মা, ভাই-বোন,
স্বামী-স্ত্রী, বাড়িতে প্রবেশের সময়, মুসলিমদের
সাথে দেখা হলে:
সালাম- السلام عليكم ورحمة الله وبركته
(আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া
রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্)
অর্থ- আল্লহ আপনার উপর শান্তি, রহমত ও
বরকত নাযিল করুক।
*সংক্ষেপে- اسلام علیكم
(আসসালামু 'আলাইকুম)
অর্থ- আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
=> প্রতি উত্তরে:
উত্তর- وعلیكم اسلام ورحمة الله وبركته
(ওয়া 'আলাইকুমুস সালামু ওয়া
রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্)
অর্থ- আল্লহ আপনার উপরেউ শান্তি, রহমত ও
বরকত নাযিল করুক।
*সংক্ষেপে- وعلیكم اسلام
(ওয়া 'আলাইকুমুস সালাম)
অর্থ- আপনার উপরেউ শান্তি বর্ষিত হোক।
[বি.দ্র.: কোনো অমুসলিমের সালামের উত্তরে
বলতে হয়- وعلیكم (ওয়া'আলাইকুম), অর্থ-
আমার জন্য যা চেয়েছেন, তা আপনাকেউ
দেওয়া হোক]
০৪. আল্লহর কাছে দোয়া বা প্রার্থনার শেষে:
বলতে হয়- امین یا رب العالمین
(আমীন ইয়া রব্বিল 'আলামিন)
অর্থ- আল্লহ তুমি কবুল কর।
*সংক্ষেপে- امین (আমীন)
অর্থ- কবুল কর।
০৫. কোনো মুসলিমের কাছে থেকে বিদায় নেয়ার
সময়:
বলতে হয়- حیاك الله (হায়াকাল্লহ্)
অর্থ- আল্লহ তোমাকে রক্ষা করুক।
*অথবা, فی امان الله (ফী আমানিল্লাহ্)
অর্থ- আল্লহ তোমাকে রক্ষা করুক।
০৬. কুরআন তিলাওয়াতের পূর্বে, দৈনন্দিন কাজের
শুরুতে, পশু জবাই প্রভৃতি সকল ভালো
কাজের শুরুতে:
বলতে হয়- بسم الله الرحمن الرحیم
(বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম)
অর্থ- পরম করুণাময়, মহান দয়ালু আল্লহর
নামে (শুরু করছি)।
০৭. প্রশংসার পাশাপাশি কারো জন্য দোয়া করা:
(এক বচন)- بارك الله فیك (বারকাল্লহু ফীক্)
(বহু বচন) - بارك الله فیكم (বারকাল্লহু ফীকুম)
অর্থ- আল্লহ আপনার প্রতি বরকত নাযিল
করুক।
=> প্রতি উত্তরে:
(এক বচন)- و فیك (ওয়া ফীক্)
(বহু বচন) - و فیكم (ওয়া ফীকুম)
অর্থ- আল্লহ আপনার প্রতিও বরকত নাযিল
করুক।
০৮. আল্লহর মহত্ত্ব ঘোষণায়:
বলতে হয়- سبحان الله (সুবহানআল্লহ্)
অর্থ- আল্লহ মহান।
০৯. ভবিষ্যতের কোনো কিছুর পরিকল্পনায়,
সংকল্পে, অঙ্গীকারে:
বলতে হয়- ان شاء الله تعالی (ইংশাআল্লহু
তা'আলা)
অর্থ- আল্লহ্ যদি চায়।
১০. আল্লহর কাছে ক্ষমা চায়তে:
বলতে হয়- استغفر الله (আসতাগফিরুল্লাহ্)
অর্থ- হে আল্লহ! আমাকে ক্ষমা কর।
১১. ভালো কিছু উপলব্ধিতে, আনন্দ-বিস্ময়ে:
বলতে হয়- ماشاء الله (মাশাআল্লহ্)
অর্থ- আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন।
১২. সফলতা বা কোনো কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর:
বলতে হয়- الحمد لله (আলহামদুলিল্লাহ)
অর্থ- সকল প্রশংসা মহান আল্লহর জন্য।
১৩. রাসূল (সঃ) এর নাম শোনা মাত্র:
বলতে হয়- ﷺ (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া
সালাম)
অর্থ- রাসূল (সঃ) ও তার পরিবারের উপর শান্তি
বর্ষিত হোক।
১৪. কোনো নবীর নাম শোনা মাত্র:
বলতে হয়- علیه سلم ('আলাইহিস সালাম)
অর্থ- তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
১৫. কোনো সাহাবির (পুরুষ) নাম শোনা মাত্র:
বলতে হয়- رضی الله تعلی عنه
(রদি আল্লহু তা'আলা 'আনহু)
অর্থ- আল্লহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুক।
১৬. কোনো সাহাবার (মহিলা) নাম শোনা মাত্র:
বলতে হয়- رضی الله تعلی عنها
(রদি আল্লহু তা'আলা 'আনহা)
অর্থ- আল্লহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুক।
১৭. একাধিক সাহাবির নাম শোনা মাত্র:
বলতে হয়- رضی الله تعلی عنهم
(রদি আল্লহু তা'আলা 'আনহুম)
অর্থ- আল্লহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুক।
১৮. কোনো দুর্ঘটনা, বিপদে পড়লে, দরিদ্রতায়,
হারানো বা মৃত্যুর সংবাদ শোনা মাত্র:
বলতে হয়- انا لله وانا الیه راجعون
(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি
রজিউন)
অর্থ- আমরা আল্লহর জন্য নিবেদিত এবং তার
কাছেই ফিরে যাব।
১৯. আত্মীয়ের মৃত্যুতে:
বলা যায়- عظم الله اجركم
('আযমাল্লহু আজরকম)
অর্থ- আল্লহ আপনাকে উত্তম পুরস্কার দান
করুক।
২০. কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর সমবেদনা জানাতে:
বলা যায়- شكر الله سعیكم
(শাকার আল্লহু সা'আইকুম)
অর্থ- আল্লহ তা'আলা আপনার প্রচেষ্টা কবুল
করুক।
২১. বিপদ বা কষ্টের সময়, সামর্থ্যের বাইরের
সমস্যার সমাধানে:
বলতে হয়- لاحول ولا قوۃ الا بالله
(লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা
বিল্লাহ্)
অর্থ- আল্লহ ছাড়া কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই।
২২. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়:
(এক বচন) - توكلت علی الله
(তাওক্কালতু 'আলাল্লহ্)
অর্থ- আল্লহর নামে (শুরু), আমি আল্লহর উপর
ভরসা করেছি।
(বহু বচন) - توكلنا علی الله
(তাওক্কালনা 'আলাল্লহ্)
অর্থ- আল্লহর নামে (শুরু), আমরা আল্লহর
উপর ভরসা করেছি।
*কোনো সমস্যায়:
বলতে হয়- توكلت علی الله
(তাওক্কালতু 'আলাল্লহ্)
অর্থ- আমি আল্লহর উপর ভরসা করেছি ।
২৩. কাউকে চরম দুর্দশায় দেখে:
বলতে হয়- رحمه الله (রহিমাহুল্লাহ্)
অর্থ- আল্লহ তার উপর রহমত বর্ষণ করুক।
২৪. কাউকে খারাপ কিছু করতে দেখলে:
বলতে হয়- اتق الله (ইত্তাকিল্লাহ্)
অর্থ- আল্লহকে ভয় করুন।
২৫. অভাবগ্রস্ত অবস্থায়:
বলতে হয়- حسبی الله (হাসবিআল্লহ্)
অর্থ- আল্লহই আমার প্রয়োজন মেটাবে।
২৬. কোনো মুসলিমের জন্য দোয়া:
বলা যায়- اضحك الله سنك
(আদহাক আল্লহ সিন্নাক)
অর্থ- আল্লহ আপনাকে সুখে রাখুক।
২৭. দৈনন্দিন কাজ শেষে, দৈনিক যিকির হিসেবে,
বিপদ থেকে মুক্তি, সফলতা প্রাপ্তি, সুখে-দুঃখে
প্রভৃতি ক্ষেত্রে আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের
জন্য:
বলতে হয়- الحمد لله (আলহামদুলিল্লাহ্)
অর্থ- সকল প্রশংসা মহান আল্লহর জন্য।
২৮. ইবাদাতের সময়, পশু জবাইয়ের সময়,
আনন্দের মুহূর্তে, যা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি
উচ্চারিত শব্দ:
বলতে হয়- الله اكبر (আল্লহু আকবার)
অর্থ- আল্লহ সবার চেয়ে বড়।
২৯. কুরআন তিলাওয়াতের পূর্বে, কোনো জমায়েতে
কথা বলার পূর্বে, দৈনন্দিন বেশ কিছু কাজে,
টয়লেটে প্রবেশের পূর্বে প্রভৃতি ক্ষেত্রে:
বলতে হয়- اعوذ بالله من الشیطان الرجیم
(আ'উযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির
রজীম)
অর্থ- আমি আল্লহর কাছে বিতারিত শয়তানের
সকল ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৩০. কালিমায়ে ত্বয়িবা:
সকলকে বলতেই হবে- لااله الا الله
(লা-ইলাহা ইল্লাল্লহ)
অর্থ- আল্লহ ছাড়া প্রকৃত/সত্য/আসল কোনো
মা'বুদ নেই।
......................................................
কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া :
৩১. রোগী দেখতে গিয়ে:
বলতে হয়- لا باس طھور ان شا الله
(লা- বা'সা ত্বহূরুন ইংশা-আল্লহ)
অর্থ- ভয় নেই, আল্লহর রহমতে আরোগ্য লাভ
করবেন, যদি তিনি (আল্লহ) চায়।
৩২. মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট:
বলতে হয়- لا اله الا الله (লা- ইলাহা ইল্লাল্লহ)
অর্থ- আল্লহ ছাড়া প্রকৃত/ সত্য/ আসল কোনো
মা'বুদ নেই।
৩৩. জীবনের নিরাশার সময়:
বলতে হয়-
اللهم اغفرلی وارحمنی و الحقنی بالرفیق الاعلی۰
(আল্ল-হুম্মাগ্ফিরলী ওয়ার হামনী ওয়া
আলহিক্বনী বিররফীক্বিল আ'লা)
অর্থ- হে আল্লহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার
প্রতি দয়া কর এবং আমাকে মহান বন্ধুর সাথে
মিলিয়ে দাও।
৩৪. নৌকা বা ভাসমান মানে আরোহণের দোয়া:
بسم الله مجرھا ومرساها ان ربی لغفور رحیم
(বিসমিল্লাহির মাজ্রেহা ওয়া মুরসা-হা-ইন্না
রব্বী লাগফূরুর রহীম)
অর্থ- এর (নৌকার) গতি এবং স্থিতি আল্লহর
নামে। নিশ্চয় আমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল ও
দয়াবান।
৩৫. বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়া:
بسم الله توكلت علی الله لا حول و لا قوۃ الا بالله
(বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু 'আলাল্লহ্,
লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ্)
অর্থ- আল্লহর নামে বের হলাম, তার উপর
ভরসা করলাম।
* বাড়িতে প্রবেশের দোয়া:
বলতে হয়- بسم الله (বিসমিল্লাহ্)
অর্থ- আল্লহর নামে (প্রবেশ করছি)।
৩৬. কোনো ইমারত/ সিঁড়ি/ উঁচু জায়গায়:
উঠার সময়- ﷲ ﷳ (আল্লহু আকবার)।
নামার সময়- سبحان الله ( সুবহান আল্লাহ)।
৩৭. দুধ পানের দোয়া:
বলতে হয়- اللهم بارك لنا فیه و زدنا منه
(আল্লহুম্মা বারিক রানা ফীহি ওয়া ঝিদনা
মিনহু)
অর্থ- হে আল্লহ! আমাদের জন্য এতে বরকত
দান কর এবং তা বৃদ্ধি করে দাও।
৩৮. আয়না দেখার দোয়া:
اللهم حسنت خلقی فاحسن خلقی
(আল্লহুম্মা হাসসানতা খলক্বী বা আহ্সিন
খুলুক্বী)
অর্থ- হে আল্লহ! তুমি আমাকে সুন্দর করে সৃষ্টি
করেছ, কাজেই আমার আমার চরিত্র সুন্দর
কর।
৩৯. দরজা-জানালা বন্ধ করা/ কোনো খাদ্যদ্রব্য
ঢাকার সময়:
দোয়া- بسم الله (বিসমিল্লাহ্)
৪০. অত্যাচারীর বদলা নিতে দোয়া:
اللهم متعنی بسمعی وبصری واجعلهما الوارڽ منی
وانصرنی علی من یظلمنی وخنه منه بڽاری
(আল্লহুম্মা মাত্তি'নী বিসামঈ অবাস্বরী
ওয়াজ'আলহুমাল ওয়ারিছা মিন্নী অংস্বুরনী
'আলা মাইঁ ইয়াযলিমুনী ওয়াখুয মিনহু বিছা'রী)
অর্থ- হে আল্লহ! আমাকে আমার কর্ণ ও চক্ষু
দ্বারা উপকৃত কর এবং মরণ পর্যন্ত অবশিষ্ট
রাখ। মে আমার উপর অত্যাচার করে তার
বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য কর এবং তার নিকট
থেকে আমার জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ কর।


0 Comments
Do not post spam link in the comment box