সবাই রাতে ঘুমানোর আগে ১৬টি আমল করে ঘুমাবেন

 সবাই রাতে ঘুমানোর আগে ১৬টি আমল করে ঘুমাবেন....

সবাই রাতে ঘুমানোর আগে ১৬টি আমল করে ঘুমাবেন


১. ওযু করে নেয়া।(ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেওয়া- আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ওযু অবস্থায় রাত্রি যাপন করে তার অন্তর্বাসে এক ফিরিশ্তাও রাত্রিযাপন করেন। সুতরাং যখনই সে জাগ্রত হয় তখনই ঐ ফেরেশতা বলেন, ‘হে আল্লাহ! তোমার বান্দা অমুককে ক্ষমা করে দাও, কারণ সে ওযু অবস্থায় রাত্রি যাপন করেছে।’’(ইবনে হিববান, সহীহ তারগীব ৫৯৪)
তিনি আরো বলেন, যে কোনও মুসলিম যখনই ওযু অবস্থায় রাত্রিযাপন করে, অতঃপর রাত্রিতে (সবাক্) জেগে উঠে ইহকাল ও পরকাল বিষয়ক কোন মঙ্গল প্রার্থনা করে, তখনই আল্লাহ তাকে তা প্রদান করে থাকেন।’’(আবু দাঊদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, সহীহ তারগীব ৫৯৫)।
২.সূরা ইখলাস, সূরা নাস , সূরা ফালাক ৩ বার করে পড়ে ফুঁ দিয়ে সাড়া শরীরে হাত বুলানো(সুরা ইখলাস পাঠ করা (৩ বার) : সুরা ইখলাস ৩ পাঠ করলে এক খতম কুরআন পড়ার সমান ছাওয়াব পাওয়া যায় এবং ১০ বার পাঠ করলে তার জন্য জান্নাতে একটা বাড়ি বানানো হয়। সহীহুল বুখারী, নাসায়ী, আবু দাউদ)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সূরা ফালাক্ক ও নাস সূরা দু'টি দ্বারা জিন ও বদ নজর থেকে ( আল্লাহর) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।
- রিয়াদুস সলেহিন:- ১০২২
৩. আয়াতুল কুরসি(আয়াতুল কুরসী পাঠ করা ১ বার : সকাল পর্যন্ত তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন হেফাজতকারী ফিরিশতা তাকে নিরাপত্তা দেবে। এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তার ধারে-কাছেও আসতে পারবে না। সহীহ বুখারী)।
৪. সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার।(সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার (সাইয়েদুল ইস্তেগফার) বা ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দো‘আ :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।)
৫. বিছানা পরিষ্কার করা।(নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যদি তোমাদের কেউ শয্যায় যায়, তখন সে যেন তার লুঙ্গির দ্বারা বিছানাটা ঝেড়ে নেয়। কারণ সে জানে না যে বিছানার ওপর তার অনুপস্থিতে পীড়াদায়ক কিছু আছে কিনা।(বুখারি-৬৩২০)
৬. ডান কাত হয়ে ঘুমানো।(ডান কাতে শোয়াহজরত বারাআ ইবনু আজিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপর ঘুমাতেন।’ বুখারি)।
৭. ঘুমের দোয়া পড়ে নিবেন।(রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑِﺎﺳْﻤِﻚَ ﺃَﻣُﻮﺕُ ﻭَﺃَﺣْﻴَﺎ
(আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া)।
‘হে আল্লাহ ! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হবো।’(বুখারি- ৬৩২৪।)।
৮. সুবাহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ্ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৪ বার(কারো একজন দাস থাকলে দিনে-রাতে যে সেবা-যত্ন ও সাহায্য করতো তার থেকেও বেশি উপকার পাওয়া যাবে এই আমল করলে।)
৯. সূরা মূলক(সূরা মূলক পড়া : প্রতিদিন (দিনে বা রাতে যেকোনো এক সময়) সূরা মূলক তেলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত : “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আলিফ লাম মীম তাংজিলুল কিতাব (সুরা আস-সাজদা) ও তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক) তেলাওয়াত না করে কোনদিন ঘুমাতেন না”। (সুনানে আত-তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ)
* এই সুরাটি নিয়মিত প্রতিদিন তেলাওয়াত করলে কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতের বেলা সুরা মুলক তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। সুনানে আন-নাসায়ী)
১০. কমপক্ষে কুরআনের ১০০ আয়াত পাঠ করা।(রাতে এক শো আয়াত পাঠ করা- তামিমে দারি ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম‎ বলেছেন: “যে ব্যক্তি রাতে এক শো আয়াত পাঠ করল, তার জন্য পূর্ণ রাতের কিয়াম (সারা রাত ধরে নামাজ আদায়ের সওয়াব) লিখা হবে”(দারেমি-৩৪৫০, শাইখ আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন)।
১১. সূরা তাকাসুর( ১০০০ আয়াতের সওয়াব লিখা হয়)।
১২. ৪ বার সূরা ফাতিহা।
১৩. সূরা ওয়াকিয়াহ( দরিদ্রতা দূর করে)
১৪. সূরা কাফিরুন পাঠ করা( ঘুমানোর আগে সূরা কাফিরুন পড়া (১ বার) : শিরক থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- “এই সূরাটিতে শিরক থেকে বাঁচার শিক্ষা রয়েছে।” আবু দাউদ)
১৫. দুরুদ শরীফ
১৬. সূরা বাকারার শেষ ২ আয়াত(রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যাবে।
খ. বালা-মুসিবত ও যেকোনো ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে।
গ. জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে।
ঘ. আয়াতগুলো পড়ে শেষে ‘আমিন’ বললে আয়াতগুলোতে যেই দুয়া রয়েছে সেইগুলো আল্লাহ তাআ’লা কবুল করে নেন।
উক্ত দুই আয়াতের এ ফযিলতের কারণেই হযরত আলী (রাঃ) বলেন- “আমার মতে যার সামান্যও বুদ্ধিজ্ঞান আছে, সে যেন এ দুটি আয়াত পাঠ করা ছাড়া নিদ্রা না যায়।”)

Post a Comment

0 Comments