Happy New Year” পালন করা যাবে কি যাবে না সেটা পরের সাবজেক্ট। তার আগে আমরা “Happy New Year” এর প্রকৃত রূপটা তো বুঝি!
“Happy New Year” পালন করা যাবে কি যাবে না সেটা পরের সাবজেক্ট। তার আগে আমরা “Happy New Year” এর প্রকৃত রূপটা তো বুঝি! চলুন, এটা কি আসলেই হ্যাপির নাকি চরম কষ্টের সেটার মুখোশ উন্মোচন করে আপনাদের দেখাবো— এই দিনে কি করা উচিত ছিলো আমাদের, অথচ আমরা কি করে নিজেকে চরম গাধামির পরিচয় দেই!
তো চলুন প্রথমেই জেনে নিই “Happy New Year” এর ডেফিনেশন—
“হ্যাপি নিউ ইয়ার” মানে কি জানেন? প্রকৃতপক্ষে “হ্যাপি নিউ ইয়ার” মানে হলো— “আমার নির্দিষ্ট পরিমাণ হায়াত থেকে চলে গেলো একটি অমূল্য বৎসর, যাকে শত চেষ্টাতেও ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। সামনে আরেকটি বৎসর হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকছে আমায় আর আমি দ্রুতই আমার নিশ্চিত গন্তব্য (মৃত্যুর) দিকে ছুটে চলছি।”
এখন বলুন তো, এই যখন হ্যাপি নিউ ইয়ারের প্রকৃত অর্থ, তখন সেখানে এই দিনে আপনি কি খুশিতে নাচবেন? নাকি অবশ্যম্ভাবী মৃত্যু সন্নিকটে চলে এলো বলে কষ্টে কাঁদবেন?
একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবেন।
ধরুন, কয়েকজন ফাঁসির আসামি জেলে বন্দী হয়ে আছে। তাদের সকলেরই হাতে আর ৩ মাস সময় আছে। ৩ মাস পরই সবার ফাঁসি হয়ে যাবে!
দেখতে দেখতেই চলে গেলো ১ মাস! তো এই এক মাস পূর্ণ হওয়ার সুবাদে এবং সামনে আরেকটি নতুন মাসের আগমন উপলক্ষে তারা কি “Happy New Month” উৎযাপন করবে? জমকালো পার্টি দিবে? আনন্দে খাসি জবেহ করে বিরিয়ানি খাবে? আতশবাজি ফোটাবে?
নাকি ১ মাস চলে যাওয়ার দরুন ভীষণ চিন্তিত হয়ে পরবে! সামনে আরেকটা নতুন মাস চলে আসছে এবং সেটাও এই মাসের মতোই দেখতে দেখতে চলে যাবে বলে টেনশনে চেহারা পাংশু বর্নের হয়ে যাবে! চোখের সামনে দিনরাত শুধু ফাঁসির কাষ্ঠটাই ঝুলবে! আর ২ মাস পর নিশ্চিত মৃত্যু এই কথা স্মরণ হতেই হুহু করে কাঁদবে!
আমায় বলতে হবে না। আপনিই নিজেই স্বীকার করবেন, অবশ্যই তারা ৩ মাসের ভেতর থেকে ১ মাস চলে যাওয়ায় দরুন ভীষণ দুঃখিত হবে। “Happy New Month” এর পরিবর্তে নাম দিবে “Sad New Month”!
তাহলে তাদের আর আমাদের মাঝে পার্থক্য কোথায়? ১০০ বছর পর তো কেউই আমরা থাকবো না! নির্ধারিত সময় থেকে জীবনের ১ বছর চলে গেলো! দ্রুতই ঘনিয়ে আসছে মৃত্যু, সেই চিন্তা নেই আমাদের! আর আমরা আগত বৎসরকে অভিবাদন জানিয়ে আনন্দ করছি! এর চেয়ে বড় জাহেলিয়াত আর কি হতে পারে আমার জানা নেই।
বস্তুত আমরাও ফাঁসীর আসামি। সকলের উপর নিশ্চিত মৃত্যুদন্ডের আদেশ করে দেওয়া আছে।
আল্লাহ পাক বলেন— “ আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি।” [ সূরাঃ আল ওয়াক্বিয়াহ ৫৬:৬০]
তাই এই দণ্ডাদেশ থেকে পালানো অসম্ভব। এখন বলুন, ফাঁসীর আসামি হয়েও কিভাবে আমরা নিউ ইয়ারকে হ্যাপি নিউ ইয়ার বলি?
বলা তো উচিত ছিলো “স্যাড নিউ ইয়ার”! উচিত ছিলো আল্লাহর সামনে এই দিনে প্রচুর কান্নাকাটি করা।
হায় আল্লাহ! জানিনা আমার মৃত্যুটা তুমি কবে, কখন কোন তারিখে নির্ধারণ করেছো! আজ আমার হায়াত থেকে আরো একটি বৎসর বিদায় নিলো আমার রব! অথচ আমি যে কিছুই করতে পারলাম না। পারলাম না তোমায় রাজি করতে, খুশি করতে, শুধু অহরহ গুনাহই করে গেলাম। জানিনা সামনের বৎসরটি আমার ভাগ্যে আছে কিনা!
আমি জানিনা এখুনি মৃত্যু হয়ে গেলে আমার কি হবে! আমি জানিনা আমি কবরের আজাব থেকে পরিত্রাণ পাবো কিনা!
আমার জানা নেই আমার মৃত্যুর কষ্টটা সহনশীল হবে নাকি প্রচন্ড যন্ত্রণার হবে!
আমার জানা নেই আমি জান্নাতি না জাহান্নামি!
অথচ দেখো আমার রব!
আমি কয়েকশত মেসেজ কিনে রেখেছি বন্ধুদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা, আনন্দ বিনিময় করবো বলে!
অথচ দেখো আমার রব!
আমি আতশবাজি কিনে রেখেছি, রাতে জ্বালাবো বলে!
অথচ দেখো আমার রব!
আমি অফিসে কেক কাটবো বলে ঠিক করেছি, আমি স্কুলে আনন্দ মেলা করবো বলে ঠিক করেছি, আমি কলেজে নৃত্যানুষ্ঠান করবো বলে ঠিক করেছি, আমি বন্ধুদের নিয়ে হৈ-হুল্লোড় করার জন্য ঘুরতে যাবো বলে ঠিক করেছি!...
হায়! কে আছে আর আমার মতো এতো নির্বোধ! কে আছে আর আমার মতো এমন পাগল!
এরপরেও কি বলবেন নিউ ইয়ার উৎযাপনের? এরপরও বলবেন, এটা পালন করা যাবে! তাহলে শুনুন, রাসুল (ﷺ) স্পষ্ট বলে দিয়েছেন—
“যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” -[আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১]
আর “হ্যাপি নিউ ইয়ার” ইহুদি- খ্রিষ্টান বিধর্মীদের কালচার। নির্বোধের মতো নিউ ইয়ার উৎযাপন করে আপনি আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাচ্ছি না-তো


0 Comments
Do not post spam link in the comment box